গ্রীষ্মের পোশাকে বৈচিত্র্য



bangla-fashionফ্যাশন শোর বিভিন্ন পোশাকে মডেলরা ঢাকা ফ্যাশন উইক কয়েক বছর ধরে ফ্যাশন শোর আয়োজন করে আসছে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে ‘ঢাকা ফ্যাশন উইক-২০১০: সামার কালেকশন’ শীর্ষক ফ্যাশন শোর আয়োজন করা হয়েছিল।
বসনে কখনো ঐতিহ্যের বাহারি ভাব, আবার কখনো দেশি জামদানির স্নিগ্ধতা—পাশ্চাত্যের আধুনিকতার সঙ্গে প্রাচ্যের ঐতিহ্য আর আভিজাত্যের এক শৈল্পিক সমন্বয় যেন। নকশায় আদিবাসীদের কাঠ, পুঁতি ও নকশিকাঁথার কাজ। কারুশিল্প থেকে শুরু করে নানামাত্রিক হাতের কাজ, মেশিন এমব্রয়ডারি, ছাপা, আঁকা, পুঁতির অলংকার ছিল। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের ফ্যাশনের যেন ঐতিহ্য আর আধুনিকতার নতুন এক পসরা। ‘মম চিত্তে নীতে নৃত্যে তা তা থৈ থৈ…’ বা কাদের কুলের বউগো তুমি…’সহ অন্যান্য গানের সঙ্গে শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, টপস, স্কার্ট, শার্ট পরে র‌্যাম্পে হেঁটে বেড়ান টুম্পা, মৌ, আরিয়ানা, মিলা, লিনা খান, চিণ্ময়ী, আঁখি, মৌনতা, রুমা, সানজানাসহ ৪০ জন মডেল। ফ্যাশন হাউস মানশা, ফরচুনা, রোকসানা সালেম, মাহমুদুল হাসান, শিরিন করিম, উত্তম ঘোষ ও যাত্রার তৈরি পোশাক প্রদর্শন করা হয় এতে।
এসব পোশাকের অভিনব নকশার সঙ্গে রঙের বৈচিত্র্য ছিল চোখে পড়ার মতো। মানশার পরিচালক ও ডিজাইনার ফারহানা তাহেরের পোশাকে ছিল আভিজাত্যের সঙ্গে রঙের মার্জিত ছোঁয়া। মসলিন, শিফনের অনেকগুলো শাড়ি উপস্থাপন করে। ফরচুনার তৈরি জিনস, পলো শার্ট, শাট, স্কাটের পাশাপাশি চামড়ার তৈরি ব্যাগ, ওয়ালেট, জুতাও দর্শকদের সামনে উপস্থিত করা হয়। রোখসানা সালামের করা পোশাকগুলো ছিল বিশেষ ধরনের। হিজাব, বোরখার নকশায় ছিল মার্জিত ও কোমল রঙের প্রভাব। প্রকৃতির ধারণায় শিরিন করিমের ‘স্বয়ংবরা’ শিরোনামে তৈরি করেছেন গাছপালা, ফুল, প্রজাপতি, ঝোপঝাড়সহ নানা জ্যামিতিক উপস্থাপনা। মাহমুদুল হাসানের ছিল মিলেনিয়াম কালেকশন। সুতা ও নকশায় উঠে এসেছে পরিবেশবান্ধব সচেতনতা। ফ্যাশন শোর ফাঁকে ফাঁকে ছিল সংগীতানুষ্ঠান। ঢোলের তালে তালে আদিবাসীদের পোশাক পরে, মডেলরা র‌্যাম্পে হেঁটে ফ্যাশন হাউস ‘যাত্রার’ উপস্থাপনা উপস্থিত দর্শকদের তাক লাগিয়ে দেন।
পাটের সোনালি দিন ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ডিজাইনার উত্তম ঘোষ কিছু স্বতন্ত্র ডিজাইন তৈরি করেন পাটের উপকরণ ব্যবহার করে। পাটের সুতায় বোনা কাপড়ে স্যুট, ওয়েস্টার্ন আউটফিট, মসলিন ও জামদানি শাড়ি ছিল এবারের ঢাকা ফ্যাশন উইকের বিশেষ আকর্ষণ।
ঢাকা ফ্যাশন উইকের প্রেসিডেন্ট কৌশিকি নাসের তুপা বলেন, ‘আমাদের তাঁতি, ডিজাইনাররা খুবই সৃষ্টিশীল ও পরিশ্রমী। ডিজাইনারদের পরিচিত করতে, সারা বিশ্বে দেশি পোশাকের পাশাপাশি দেশীয় কাপড় সবার কাছে পৌঁছে দিতে এই শোর উদ্দেশ্য।’
এবার ঢাকা ফ্যাশন উইকের সহ-আয়োজক ছিল একুশে টেলিভিশন, ভোরের কাগজ, অটবি, মাস্টহেড পিআরএ, চারবেলা চারদিকে, বেঙ্গল মিউজিক।