বিজনেস ক্যাজুয়াল....

business-casual-dress
বিজনেস ক্যাজুয়াল অফিসে খুব কেতাদুরস্ত হয়ে থাকাটা এখন অনেকেই তেমন পছন্দ করেন না। অফিসের পোশাকটা হওয়া চাই আরামদায়ক। আবার ঘরে পরার পাতলা টি-শার্ট, ঢিলে প্যান্ট পরেও তো অফিসে আসা যায় না, তা যতই আরামদায়ক হোক না কেন। এর পাশাপাশি ফ্যাশনের কথাও আছে। আনুষ্ঠানিক পোশাকের ধরনে তাই বেশ পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। সব মিলে বিজনেস ক্যাজুয়াল পোশাকের চল এখন বেশ।
এ নিয়ে কথা হয় মডেল আদিল হোসেন নোবেলের সঙ্গে। তিনি মোবাইল ফোন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান এয়ারটেলের করপোরেট ও এসএমই সেলস বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করছেন। তাঁর মতে, ব্যাংক বা টেলিকম প্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে এক দিন অনেকে অফিসে ক্যাজুয়াল পোশাক পরেন। তবে অবশ্যই তাতে ন্যূনতম মান থাকে। ক্যাজুয়াল পোশাক পরলেও পোশাকে আনুষ্ঠানিকতার একটা ছাপ থাকে।
পোশাক যা-ই হোক, তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়া চাই। টি-শার্ট, জিনস পরলেও দেখতে যেন মার্জিত লাগে। তাই বলে গোল গলা গেঞ্জি বা স্যান্ডেল পরে অফিস করা যাবে না। অর্থাৎ বাসার পোশাকে অফিস করা যায় না। স্যুট না পরলেও ফুলহাতা শার্ট পরা উচিত। সঙ্গে খাকি বা গাঢ় রঙের প্যান্ট। জুতোটা অবশ্যই পলিশ করা হতে হবে।
আদিল হোসেন আরও বলেন, যা-ই পরা হোক না কেন, পোশাক হবে ফিটিং। শার্টের রং গাঢ় বা সলিড হবে। লিনেন বা গ্যাবারডিন কাপড়ের প্যান্ট পরা যেতে পারে। রং বাদামি, ছাই বা খাকি হতে পারে। ব্লেজার বা জ্যাকেট অথবা দুটোর মাঝামাঝি কিছু একটা পরা যায়। এগুলো দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় আরামদায়ক, মানানসই, আবার কর্মক্ষেত্রেও স্বচ্ছন্দ। সবচেয়ে বড় কথা, যা-ই পরা হোক না কেন, তাতে করপোরেট একটা লুক থাকবে। হালে এটাকে বলা হচ্ছে বিজনেস ক্যাজুয়াল পোশাক।
নেসলে বাংলাদেশ লিমিটেডের সাপ্লাই চেইন পরিচালক নকিব খান জানালেন, প্রতিষ্ঠানের ধরন অনুযায়ী বা অনুষ্ঠানে গেলে অনুষ্ঠানের ধরন অনুযায়ী পোশাক পরতে হয়। ব্যাংকে কর্মরত হলে স্যুট-টাই (কালো স্যুটের সঙ্গে একই রঙের প্যান্ট) পরা যায়। ড্রেসকোড বিজনেস ক্যাজুয়াল বললে টাই-স্যুট না পরলেও চলে, চাইলে ভিন্ন রঙের স্যুট-প্যান্ট পরা যায়। জ্যাকেট, জিনস, ফতুয়াও পরা যায়। গাঢ় রঙের পোশাকই রাতের অনুষ্ঠানে মানানসই।
ফ্যাশন হাউস লুবনান ও রিচম্যানের পরিচালক ও ডিজাইনার নাইমুল হক খান বলেন, ‘অনুষ্ঠান উপলক্ষে টাই পরা যেতে পারে, আবার না পরলেও ক্ষতি নেই। এটা যার যার রুচির ব্যাপার। শার্টটা ফুলহাতা হওয়াই ভালো। গরমে দিনের বেলায় হাফহাতা সাদা অথবা হালকা রঙের পোলো শার্টও পরা যেতে পারে। মোজা গাঢ় রঙের হবে, তবে খেয়াল রাখতে হবে, বসলে পায়ের খালি অংশ যেন দেখা না যায়। চামড়ার জুতা পরা যায়, তবে স্যান্ডেল নয়। অ্যাথলেটিক বা হাইকিং বুটও নয়।’
পেশাজীবীদের কাছে বিজনেস ক্যাজুয়াল পোশাক জনপ্রিয়। ক্যাজুয়াল লুক হিসেবেও জিনসের প্যান্টের সঙ্গে অনেকে স্যুট-টাই পরতে পছন্দ করেন। জিনসের প্যান্ট, পোলো শার্ট কিংবা ড্রেস শার্ট ব্যবস্থাপক বা পেশাজীবীদের কাছে মানসম্মত পোশাক হিসেবে বিবেচিত।
নেকটাই, কাফলিং বিজনেস ক্যাজুয়াল ধাঁচের পোশাকে পরা হয় না। আনুষ্ঠানিক ভাব আর আরাম দুটোই পাওয়া যায় বিজনেস ক্যাজুয়াল ধাঁচের পোশাকে। তবে এটা কিন্তু পার্টি বা পিকনিকের পোশাক নয়। অফিসের কেতাদুরস্ত ভাবটা অনেকেই তেমন পছন্দ করে না। আবার খুব সাদামাটাভাবেও অফিস করা যায় না। তাদের চাহিদা আর রুচির সঙ্গে মানানসই হতে পারে এ ধরনের পোশাক। আরামদায়ক প্যান্ট-শার্টের সঙ্গে চামড়ার তৈরি জুতা ও বেল্ট পরতে হবে।
ওটুর প্রধান নির্বাহী আসিফ ইবনে মান্নান জানালেন, এই ধাঁচের পোশাক হিসেবে ক্যাজুয়াল শার্টই পরা হয়। এর সঙ্গে ব্লেজারটা বেশ ফ্যাশনেবল হতে পারে। একটু ভিন্নতা থাকতে পারে ব্লেজারের নকশায়। ন্যারো ফিটিং প্যান্ট পরতে পারেন। জিনসও বেশ মানাবে। তবে জুতা ও বেল্টে আনুষ্ঠানিক ভাবটা থাকা চাই।
যে ধরনের পোশাকই পরেন না কেন, শরীরের উচ্চতা, গঠন ও মুখের গড়ন বিবেচনায় রাখুন। কাটিং ও ফিটিং ভালো হওয়া জরুরি।